আকরাম ঃ ঢাকার সাভারে ভ্রাম্যমান আদালত আশুলিয়া থানাধীন আশুলিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কাঠগড়া আমতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আনুমানিক ১৮ শত বাসা বাড়ীর’ অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পরিচালিত এই অভিযানে আনুমানিক ৩ কিলোমিটার ব্যাপী অবৈধ বিতরণ লাইন তুলে ফেলা হয় এবং আনুমানিক ১৮ শত বাসাবাড়ির অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এঅভিযান চলাকালে অবৈধ সংযোগ কাজে ব্যবহৃত রাইজার এবং বিতরণ পাইপগুলিও খুলে জব্দ করা হয়।
আশুলিয়া রাজস্ব জোন এর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ এর নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (জোবিঅ) এর ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু সাদাত মোঃ সায়েম, উপ-ব্যবস্থাপক আমিরুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপক মহিউদ্দিন, সহ-ব্যবস্থাপক আব্দুল মান্নান, সহ-ব্যবস্থাপক সাকিব বিন আব্দুল হান্নান, সহ-কর্মকর্তা এহসানুল হক, সহ-ব্যবস্থাপক ইদ্রিস আলী সহ তিতাসের কারিগরি টিমের শ্রমিকগণ।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ বলেন, আজ আশুলিয়ার কাঠগড়া আমতলা এলাকায় সকাল থেকে শুরু হওয়া অভিযানে আমরা আনুমানিক ১৮ শত বাসা বাড়ীতে নেয়া অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি।
গণমাধ্যমকে তিনি আরও জানান, অবৈধ সংযোগ গ্রহনকারী এবং তাদেরকে যারা সংযোগ প্রদান করেছে এসব বাড়ীর মালিকদের বিরুদ্ধে আমরা আইনী প্রক্রিয়ার ভিতরে যাবো।
অভিযানের ব্যাপারে সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (জোবিঅ) এর ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু সাদাত মোঃ সায়েম জানান, ‘আজকে সকাল থেকে শুরু হওয়া অভিযানে আশুলিয়া থানাধীন আশুলিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের নিক্ককন হাউজিং ও আমতলা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ সংযোগগুলি বিচ্ছিন্ন করেছি। এখানে অবৈধ সংযোগকারীরা আমাদের মূল ৪ ইঞ্চি গ্যাসের সরবরাহ লাইন থেকে অবৈধভাবে ২ ইঞ্চি ব্যাসের সংযোগ পাইপ ব্যবহার করে প্রায় ৩ কিলোমিটারব্যাপী অবৈধ সংযোগ প্রদান করেছে। আমরা সেগুলি তুলে ফেলেছি। এতে আনুমানিক প্রায় ১৮ শত বাসাবাড়ীর অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
এসময় তিনি আরও জানান, এই একই জায়গায় আমরা এই মাসের গত ২৪ তারিখে অভিযান পরিচালনা করেছিলাম, তবে সেই দিন সম্পূর্ণ অবৈধ লাইন তুলে ফেলতে পারিনি সময়ের অভাবে। এই এক সপ্তাহের ভিতরে আবারও নতুন করে পাইপ ব্যবহার করে সংযোগ নেয়া হয়েছে যা আজ আমরা তুলে জব্দ করেছি।
তিনি বলেন, এছাড়াও ড্রেস কোয়ালিটি ওয়াশিং প্ল্যান্ট নামের একটি কারখানায় অবৈধভাবে শিল্প সংযোগ লাইন নেয়ায় ওই কারখানার লাইনটিও আমরা বিচ্ছিন্ন করেছি এবং এদের বিরুদ্ধে আমরা আইনী ব্যবস্থা নেবার জন্য বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর নিকট জানিয়েছি।
অবৈধ গ্যাস সংযোগ প্রদানকারী এবং গ্রহনকারী বাড়ীর মালিকদের বিরুদ্ধে কোন ধরণের আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন?- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রকৌশলী আবু সাদাত মোঃ সায়েম জানান, আসলে সম্পূর্ণ অভিযান পরিচালনা করেন আশুলিয়া রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। গত ২৪ তারিখের অভিযানেও অবৈধ গ্যাস সংযোগ গ্রহনকারীদেরকে বিভিন্ন জরিমানা করেছেন। মূলত আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের এখতিয়ার তার, তিনি বাংলাদেশ গ্যাস আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আশুলিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী জানান, রাতের অন্ধকারে এসব লাইন নেয়া হয়। যদি প্রশাসন, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গ্যাস কর্তৃপক্ষ সহায়তা করে তাহলে আমি জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার পক্ষ থেকে এব্যাপারে সর্বোচ্চ সহায়তা করবো।
প্রসঙ্গত, অভিযান চলাকালে ওই এলাকায় যেকোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক এমদাদ এর নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিলো।