বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩, ০২:৫৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম:
ইচ্ছা করলে খালেদা জিয়ার সময় মন্ত্রী হতে পারতাম : কাদের সিদ্দিকী তুই কথা।। মানুষের কল্যাণে প্রতিদিন নলতায় রমজানকে সামনে রেখে খাদ্য সামগ্রী ও কাপড় প্রদান করলেন জাহিদুল হক কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের ৪০বছর পূর্তিতে র‌্যালী, গুণীজন সন্মননা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত কেক কেটে ‘উদীয়মান সূর্য’ ছবির ডাবিং শুরু ইবিতে মেসডার নবীন বরণ প্রবীণ বিদায় অনুষ্ঠিত  সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী জন্মস্থান না’হলেও জীবনের রঙিন সময়গুলো এখানে কাটিয়েছি- পারভীন সুলতানা মৃত্যু বার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা যিনি দিতি নামে বেশি পরিচিত গড়েয়া হাট ব্রাক এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার উদ্যোগে ক্রেষ্ট বিতরণ প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে দুনিয়া প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে
নড়াইলের মধুমতী নদীর বদলে যাচ্ছে গতিপথ!!

নড়াইলের মধুমতী নদীর বদলে যাচ্ছে গতিপথ!!

উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধিঃ নড়াইলের মধুমতী নদীর গতিপথ বদলে যাচ্ছে। গত ছয় বছর ধরে নড়াইলের লোহাগড়া ও ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার সীমান্তবর্তী নড়াইলের লোহাগড়ার জয়পুর ইউনিয়ন এলাকায় গতিপথের এ পরিবর্তন হচ্ছে। উজ্জ্বল রায় নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, এতে করে আলফাডাঙ্গার টগরবন্ধ ইউনিয়নের নয়টি গ্রাম ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। তবে ভাঙনের হুমকির মধ্যে আছে এই ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রাম। এ ছাড়া নতুন করে ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে লোহাগড়ার জয়পুর ইউনিয়নের তিনটি গ্রাম। গত রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, নদীটি জয়পুর ইউনিয়নের আস্তাইল এলাকার পর অন্তত ১৫ কিলোমিটার ঘুরে ডিম্বাকৃতির মতো আবার আস্তাইলে এসে লোহাগড়ার আমডাঙ্গার মাঝ দিয়ে প্রবাহ ছিল। এতে আস্তাইল এলাকায় উভয় গতিপথের মাঝে মাত্র ৫০ ফুট এলাকা স্থল ছিল। ২০১৩ সালে বর্ষায় এক রাতে ওই ৫০ ফুট এলাকায় প্রবল গতিতে ভেঙে নদী বের হয়ে যায়। তখন থেকে আগের ওই ১৫ কিলোমিটার এলাকায় প্রবাহে স্রোত কমতে থাকে। পড়তে থাকে চর। শুকনা মৌসুমে আগের প্রবাহ এলাকায় প্রায় শুকিয়ে যায়। এতে টগরবন্ধ ইউনিয়নের টিঠা-পানাইল, সাতবাড়িয়া, নন্দীগ্রাম, ফুলবাড়িয়া, পানাইল, ঘিদাহ, টিঠা, তিতুরকান্দি ও কৃষ্ণপুর ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। নদীর গতিপথ পরিবর্তনের আগে ওই নয়টি গ্রামে তীব্র ভাঙন ছিল। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, লোহাগড়ার আমডাঙ্গা গ্রামটি কয়েক দশক ধরে নদীতে ভেঙে তিনটি জনপদের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙনের ফলে নদীর এ পারে পিছিয়ে বসতি গড়েছেন অনেকে, এটি মূল আমডাঙ্গা। ভাঙনের কবলে পড়ে গ্রামের বেশির ভাগ পরিবার নদীর অপর পারে বসতবাড়ি করেছে। সে অংশের নাম এখন পারআমডাঙ্গা। আরেক অংশ ওই ডিম্বাকৃতি এলাকার মধ্যে চারপাশ দিয়ে নদীবেষ্টিত আস্তাইল-আমডাঙ্গায় বসতি গড়েছে। নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারণে আস্তাইল-আমডাঙ্গা অংশটি তীব্র ভাঙনে ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। নতুন করে ভাঙন এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে লোহাগড়ার পারআমডাঙ্গা ও ছাগলছিড়া গ্রামে। গতিপথ পরিবর্তনের আগে মূল আমডাঙ্গা গ্রাম ঘেঁষে নদীর প্রমত্তা প্রবাহ ছিল। ভাঙন নদীর এ পাড়ে এগোচ্ছিল। ফলে হুমকিতে পড়েছিল লোহাগড়ার চরআড়িয়ারা ও মূল আমডাঙ্গা গ্রামের বাকি অংশটুকু। এ ছাড়া গ্রামের মূল পাকা সড়ক, আমডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয় হুমকিতে পড়েছিল। এ অংশ ছেড়ে নদী বর্তমানে বাঁ তীর ঘেঁষে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদীর মাঝখানে বিশাল চর পড়েছে। সেখানে শুরু হয়েছে চাষাবাদ। ফলে ডান তীর এলাকায় নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। শুকনো মৌসুমে এর বেশির ভাগ জায়গায় পানি থাকে না। নদী বাঁ তীর ঘেঁষে প্রবাহিত হওয়ায় ভাঙনের কবলে পড়েছে পারআমডাঙ্গা ও ছাগলছিড়া গ্রাম।

টগরবন্ধ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ইমাম হোসেন জানান, নদীর গতিপথের ওই পরিবর্তনে টগরবন্ধ ইউনিয়নের নয়টি গ্রাম ভাঙন থেকে রক্ষা পেয়েছে। তবে এ ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রাম ইকরাইল, শিকারপুর, কুমুরতিয়া এবং টিঠা ও টিঠা-পানাইলের একাংশের চারপাশ দিয়ে নদীবেষ্টিত হয়ে পড়েছে। এতে যেমন হয়েছে গ্রামগুলো যোগাযোগবিচ্ছিন্ন, তেমনি এখন এসব গ্রাম ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। ওই পাঁচটি গ্রামের বসতি প্রায় ১১ হাজার। এখানে রয়েছে ইকরাইল কারিগরি কলেজ, আস্তাইল-আমডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খায়রুন্নেছা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, টিঠা-পানাইল ও টিঠা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বিদ্যাপীঠ, শিকারপুর দারুসছালাম হাফেজিয়া মাদ্রাসা, পোস্ট অফিস, আটটি মসজিদসহ নানা স্থাপনা।

জয়পুর ইউপি চেয়ারম্যান ফকির আখতার হোসেন বলেন, নদীর গতিপথ পরিবর্তনের ফলে এ ইউনিয়নের একাংশ ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে। নদীর অপর পাড়ের অংশে ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

নড়াইল পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ তালুকদার জানান, আমডাঙ্গা এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ীভাবে ব্লক দিয়ে এক কিলোমিটার অংশের জন্য প্রকল্প তৈরি হচ্ছে। বর্তমানের ভাঙন এলাকায় এ প্রকল্পের কাজ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

Comments are closed.




© All rights reserved © MKProtidin.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com