উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধিঃ ‘অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো’ নড়াইলবাসী এ স্লোগানকে সামনে রেখে লাখো মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও ভাষাশহীদদের স্মরণ করলো । নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের কুড়িরডোব মাঠে লাখো মোমবাতি একসঙ্গে জ্বলে উঠে। একই সঙ্গে ভাষা দিবসের ৬৯তম বার্ষিকীতে ৬৯টি ফানুস ওড়ানো হয়। এবারের আয়োজনটি উৎসর্গ করা হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। উজ্জ্বল রায় নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, জমিদারদের রেখে যায়া ৬ একর জমির বিশাল কুড়িরডোব মাঠে অন্যান্য বছরের মতো এবারও কলার গাছ এবং কাঠ দিয়ে মোমবাতির আলোর মাধ্যমে শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বাংলা বর্ণমালা, আল্পনাসহ গ্রাম বাংলার নানা ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্জ্ব¡লনে কয়েক হাজার শিশু-কিশোর অংশগ্রহণ করে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় কুড়িরডোব খেলার মাঠে একলাখ মোমবাতি জ্বালিয়ে এ ব্যতিক্রম আয়োজনের মধ্যদিয়ে ভাষাসৈনিকদের স্মরণ করা হয়েছে। সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ২১’র সন্ধ্যায় শুরু হয় লাখো মঙ্গল প্রদীপ তথা মোমবাতি প্রজ্জ্বলন। মোমবাতির আলোতে আলোকিত হয়ে উঠে বিশালাকৃতির এ মাঠ।
সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় নড়াইলের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের শিল্পীরা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ এ গান পরিবেশনের সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা।
এ সময় নড়াইল জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা,পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন,জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস,জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলু,একুশের আলোর সভাপতি প্রফেসার মুন্সী হাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ও নাট্য ব্যক্তিত্ব কচি খন্দকার ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মলয় কুমার কুন্ডু,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মো.ইয়ারুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) কাজী মাহাবুবুর রশিদ,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা সেলিম,উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট অচিন চক্রবর্তি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুকসহ নড়াইলের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রতি বছরের মতো এবারও নড়াইলবাসী, ঢাকাসহ নড়াইলের পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার দর্শনার্থী এ মনোরম দৃশ্য উপভোগ করেন। এ আয়োজন সফল করতে এক মাস যাবত সাংস্কৃতিক কর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও শ্রমিকরা কাজ শুরু করে অনুষ্ঠানটি সফল করেন। তিন শতাধিক পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক মাঠের চারপাশে সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষা করেন। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের কুড়িরডোব মাঠে লাখো মোমবাতি একসঙ্গে জ্বলে উঠে। নড়াইল একুশের আলোর সভাপতি বলেন, ‘সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা মুক্ত সুখী-সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্নকে ধারণ করে প্রতি বছর আয়োজন করা হয় এ অনুষ্ঠানের। এ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি ঘর মুক্তির আলোয় ভরে উঠুক এ কামনা আমাদের। প্রসঙ্গত,নড়াইলে একুশ উদযাপন পর্ষদের আয়োজনে ১৯৯৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে এভাবেই ভাষা শহীদদের স্মরণ করা হচ্ছে।