উজ্জ্বল রায় জেলা প্রতিনিধিঃ নড়াইল-যশোর-ঢাকা-সিলেট। অধিনায়ক হিসেবে ছেলের শেষ ম্যাচ দেখতে সফরসূচি ঠিক করার কথা জানাচ্ছিলেন মাশরাফির বাবা গোলাম মুর্তজা। সকাল সাড়ে দশটায় যশোর থেকে ঢাকায়। উজ্জ্বল রায় নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, সেখান থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার ফ্লাইটে সিলেটে। যে সিডিউল তাতে টস তো মাঠে বসে দেখা কঠিন হয়ে যাবে? টেলিফোনের ওপার থেকে গোলাম মুর্তজা বললেন-দেখি যদি হয়তো মাঠে তাড়াতাড়ি যেতে পারি, তাহলে টসটা দেখতে পারবো।’ মাশরাফি টস করতে মাঠে নামছেন। আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট মাঠে এমন দৃশ্য আজই যে শেষবারের মতো হতে যাচ্ছে। গ্যালারিতে বসে ছেলের সেই মূহুর্তটা দেখতে চান গোলাম মুর্তজা। কি কথা হলো তার সঙ্গে বৃহস্পতিবার? ‘মাঠে গিয়ে সিদ্ধান্ত জানানোর আগে আমার সঙ্গে কথা বলেছে। তারপর মাঠ থেকে ফিরেও রাতে আরেকবার কথা হলো। ছেলের সিদ্ধান্তে কি আপনি অবাক হয়েছেন? না, অবাক হওয়ার কিছু নেই। তবে বলারও তেমন কিছু নেই। আমি জানতাম এমন সিদ্ধান্ত ও নেবে। তাই মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু এটা এভাবে কেন হবে?’ টেলিফোনের ওপার থেকে দুঃখ লুকানোর কোন চেষ্টাই করলেন না অধিনায়কের বাবা। অনেক কথা বললেন। সেই অনেক কথার শেষ কথা হয়ে থাকলো একটা উচ্চারণ; এভাবে কেন! দেশে-বিদেশে মাঠে বসে ছেলের অনেক খেলা দেখেছেন গোলাম মর্তুজা। বলছিলেন-‘ সেই শুরুতে তাকে যখন অধিনায়কত্ব দেয়ার জন্য বোর্ড থেকে প্রস্তাব করা হয়, তখন সে নিতে চায়নি। মুলত আমিই তাকে তখন চাপাচাপি করেছিলাম। বলেছিলাম-অধিনায়কত্ব নাও। আমি ওর বাবা। ওকে তো আমি চিনি। জানতাম দায়িত্ব তাকে বদলে দেবে। দায়িত্ব পেলে সেটা কিভাবে পালন করতে হয়, সেটা সে ভাল জানে। তারপরও তো ও অধিনায়ক হিসেবে ভাল করলো। তখন আমি মাঝে মাঠে দুষ্ঠুমি করে বলতাম- দেখলে তো আমি বলায় দায়িত্বটা নিলে, এখন তো ভাল করছো। অধিনায়ক মাশরাফির সেই ভাল করার শেষদিন। ছেলের অধিনায়কত্বের শেষদিন প্রসঙ্গে গোলাম মুর্তজাও আবেগি-‘যে কোন বিদায় আসলে কষ্টের। আমি একটু আগেভাগে থেকে প্রস্তুত ছিলাম দেখে মেনে নিয়েছি। কিন্তু ভেতরে ভেতরে একটা কষ্ট তো আছেই। ওকে হয়তো আপনারা শুধু মাঠের ক্যাপ্টেন হিসেবে দেখেন। কিন্তু ও যে, আমার পরিবারেরও ক্যাপ্টেন। সেখানে ভাল-মন্দের টসের দায়িত্বটা সবসময়ে তারই।’উজ্জ্বল রায় নড়াইল জেলা প্রতিনিধি।