উজ্জ্বল রায় ,জেলা প্রতিনিধিঃ নড়াইলের লোহাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বদর খন্দকারকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় এজাহারভূক্ত আসামীসহ দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার(১০ মার্চ) বেলা ১১টায় লোহাগড়ার সর্বস্তরের জনগণের আয়োজনে একর্মসূচী পালিত হয়। উজ্জ্বল রায় নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, সূত্র জানায়, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিবিধ বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার প্রতিপক্ষের সাথে বদর খন্দকারের বিরোধ চলছিল। গত ২৪ ফেব্রুয়ারী বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে চরবকজুড়ি গ্রামের খন্দকার ময়ের আলীর ছেলে লোহাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা বদর খন্দকার নিজ ইটভাটা থেকে মোটরসাইকেলে করে নিজ বাড়িতে ফেরবার পথে ৯৫ নং টিচরকালনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা চেয়ারম্যানের গতিরোধ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হাত-পা বিচ্ছিন্ন করে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেবার পথে তার মৃত্যু হয়।
হত্যাকান্ডের পরে নিহত বদর খন্দকারের স্ত্রী নাজনীন বেগম বাদি হয়ে লোহাগড়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শিকদার নজরুল ইসলাম, লোহাগড়া ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক ফরিদ শেখ, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল আজাদ সুজন সহ ১৬জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জনের নামে ২৫ ফেব্রুয়ারী মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১৮।
মঙ্গলবার(১০ মার্চ) সকালে অবিলম্বে সকল খুনিদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচারের দাবীতে ৯৫ নং টিচরকালনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ আনোয়ার হোসেন, বাবর খন্দকার, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা,নাজনীন বেগম প্রমুখ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিল্টন কুমার দেবদাস জানান, হত্যাকান্ডের পরে পুলিশ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে এপর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলেন মোঃ মতিউর রহমান ওরফে মুন্না মোল্যা, রুহল আমিন, রফিক মোল্যা, মোঃ আলী মিয়া মোল্যা, বাবু মোল্যা। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মোঃ মতিউর রহমান ওরফে মুন্না মোল্যা এজাহারভূক্ত আসামী।
নিহত বদর খন্দকারের ভাই বাবর খন্দকার জানান, বর্তমান চেয়ারম্যান আসামী নজরুল শিকদার নিহত চেয়ারম্যান মোঃ বদর খন্দকার হত্যা মামলার আসামী ছাড়াও ১৯৯২ সালে লোহাগড়া আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আতাউল হক মিলু নৃশংসভাবে খুন হন ওই মামলার আসামী ছিলেন। ২০১১ সালে চরবকজুড়ি গ্রামের আবুল মাস্টারের ছেলে বিপ্লব হত্যা মামলার আসামী ছিলেন। ২০০২ সালে করফা গ্রামের ফকির শিকদার হত্যা মামলার আসামী ছিলেন। আসামী ফরিদ শেখ চেয়ারম্যান বদর হত্যা মামলা ছাড়াও ২০১২ সালে শংকরপাশা-কালনাঘাটে বরযাত্রিদের উপর হামলা করায় মাহামুদ নামে এক জনের মৃত্যু হয়। ওই মামলায় আসামী ছিলেন। আসামী লাবু বদর খন্দকার হত্যা মামলার আসামী ছাড়াও ২০১১ সালে চরবকজুড়ি গ্রামের আবুল মাস্টারের ছেলে বিপ্লব হত্যা মামলার আসামী, নিজ স্ত্রীকে হত্যা মামলার আসামী, যুবতী ধর্ষণ মামলার আসামী। আসামী মতিউর রহমান মুন্না মোল্যা ও তারু মোল্যা ২০১২ সালে শংকরপাশা-কালনাঘাটে বরযাত্রিদের উপর হামলা করায় মাহামুদ নামে এক জনের মৃত্যু হয়। ওই মামলায় আসামী ছিলেন।
তিনি আরো বলেন, বিগত ও আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সংক্রান্ত, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চলমান রেল লাইন প্রকল্পের কাজে চাঁদাবাজীর প্রতিবাদ করা,বালু মহলে নির্বিঘে চাঁদাবাজী করবার প্রতিবাদ করায় জনপ্রিয় চেয়ারম্যান মোঃ বদর খন্দকার কে নৃশংসভাবে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।