মোহাম্মদ আল-আমিন: করোনা ছড়িয়ে কিন্তু সরকার প্রকাশ করছে না বলে অনেকে সন্দেহ করছেন। বিষয়টি উড়িয়ে দেয়ার মতো না। তবে সরকারি তথ্য মতে, তিনজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে দুইজন ইতালি থেকে এসেছে। বাকি একজন তাদের পরিবারের সদস্য। তবে দুইজন ইতিমধ্যে সুস্থ্য হয়েছেন। এর বাইরে এখনো করোনার রোগী শনাক্ত হয়নি। সরকারি এই তথ্য ও বাস্তবতা একটু বোঝার চেষ্টা করলাম। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য কী? বাস্তবতা আসলে কী? আসুন একটু যাচাই করি;
করোনায় বিপর্যস্ত দেশ/এলাকার তাপমাত্রা:
১. করোনার শুরু থেকে চীনের উহানের তামপাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রির নিচে ও কাছাকাছি।
২. ইরানে ১০ ডিগ্রির কাছাকাছি।
৩. দক্ষিণ কোরিয়ায়ও ১০ ডিগ্রির অনেক নিচে।
৪. ইতালিতে ১৫ ডিগ্রির নিচে।
অর্থাৎ মোটামুটি ১৫ ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রা আছে এমন ক্ষেত্রে করোনা খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি।
কত তাপমাত্রা নিরাপদ?
এ পর্যন্ত প্রায় সব গবেষণা ও বিশেষজ্ঞরা মোটামুটি একমত যে, তাপমাত্র ২১-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে করোনা ভাইরাস টিকতে পারে না। যেমন;
১. হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. প্রফেসর জন নিকোলস বলেছেন, সূর্যের আলো, তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতায় করোনা টিকতে পারে না। সূর্যের আলো ভাইরাস অর্থেক ক্ষমতা শেষ করে দেয়। বাকি অর্ধেক ২ থেকে ২০ মিনিট টিকে থাকে।
২. জার্মান সেন্টার ফর এক্সপেরিমেন্টাল এন্ড ক্লিনিক্যাল ইনফেকশন রিসার্স সেন্টারের গবেষক থমাস পিচম্যান বলেছেন, সূর্যের তাপে ভাইরাসটি টিকতে পারে না।
৩. জার্মানির জার্নাল অব হসপিটাল ইনফেকশনের প্রকাশিত রিসার্সে বলা হয়েছে, ভাইরাসটি ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৫ দিন বাঁচতে পারে। সর্বোচ্চ ২৫ ডি.সে. এ কয়েক দিনের বেশি বাঁচে না।
বাংলাদেশ কেন মুক্ত?
আসনু দেখে নেই চলতি মাসের তাপমাত্র; ১ মার্চ থেকে আজ ১২ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের তাপমাত্র যথাক্রমে ৩২, ৩১, ৩০, ৩০, ৩০, ৩১, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২, ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়েস।
আক্রান্ত দেশগুলোর তুলনায় শুরু থেকেই বাংলাদেশের তাপমাত্রা অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞরা করোনা ধ্বংসে তাপমাত্রার যে সীমা বলছেন তার থেকে বাংলাদেশের তাপমাত্রা অনেক উপরে। সুতারাং বাংলাদেশে করোনা ছড়ানোর সুযোগ আপাতত নেই। প্রাকৃতিক এই প্রতিশেধকে ঢেকে আছে আমাদের সোনার বাংলা। সৃষ্টি কর্তার এটি অশেষ কৃপা। ‘করোনা ছড়িয়ে কিন্তু সরকার প্রকাশ করছে না ’ বক্তব্যটি নিছক গুজব।
সুতারাং প্যানিক ছড়ানো বা আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই। স্বাভাবিক জীবনযাপন করুন। যদি এখানে করোনার রোগী বাইরে থেকে ভাইরাস নিয়েও আর তাপমাত্রা এমনই থাকে তাহলে ভাইরাস প্রাকৃতিকভাবে নির্মূল হয়ে যাবে। তবে নিজেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ রাখতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। পরিবার-পরিজন সবাই সুস্থ থাকুন। সচেতন হোন, ভালো থাকুন। পোস্টটি শেয়ার করে আতঙ্ক ও গুজব দূর করুন।
তথ্যসূত্র: পলাশ মাহমুদ,
এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর- CCS, প্রেসিডেন্ট- CYB