বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
কালিগঞ্জে আছিয়া লুতফর প্রিপারেটরি স্কুলে মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত সলেমান মামুন ব্যারিস্টার সুমন দুই দিনের রিমান্ডে ডিএমপির ৩৮তম পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন শেখ মোঃ সাজ্জাত আলী বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা আলেমরাই এক দিন এদেশে নেতৃত্ব দেবেন।।ধর্ম উপদেষ্টা কে এই নতুন ডিএমপি কমিশনার? দৌলতপুরে বসতবাড়িতে ডাকাতির সময় মা-ছেলেকে হত্যার দায়ে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ আজ সার্চ কমিটির বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার কথা জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় জরুরি। – পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পাবনায় অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রিফিলের সময় বিস্ফোরণে ফায়ার সার্ভিসের চালক নিহত, আহত একজন

করোনা যুদ্ধে জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছে জেলা প্রশাসক ও তার স্থানীয় প্রশাসন

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০, ৯.৫০ পিএম
  • ৯০১ বার পঠিত

ব্রিটিশ শাসিত ভারতে ১৭৭২ সালে ওয়ারেন হেস্টিংস কর্তৃক প্রথম জেলা কালেক্টরের পদ সৃষ্টি করা হয়। ব্রিটিশ আমলে প্রথম সৃষ্ট পদটির নাম ছিলো ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর। এজন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়কে আজও ঐতিহ্যগতভাবে কালেক্টরেট হিসেবে অভিহিত করা হয়। পরবর্তীতে তাকে দায়িত্ব পালনের প্রয়োজনে ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থার ক্ষমতা অর্পণ করা হয়, ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট নামে আরেকটি পদ দেয়া হয়। এটি জেলার সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট। পরবর্তীতে পাকিস্তান আমলে District Magistrate বা Collector এর জন্য আরেকটি পদ সৃষ্টি করা হয় জেলার উন্নয়ন কর্মসমূহের সমন্বয় সাধনের জন্য, যার নাম ডেপুটি কমিশনার। ডেপুটি কমিশনার পদ সৃজনের দ্বারা আগের ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর এবং ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট পদ বিলুপ্ত করা হয় নি বা উক্ত পদের জন্য অন্য কাউকে নিয়োগ প্রদান করা হয়নি। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ হলে ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ এ পরিবর্তন সাধন করা হয়। বিচারিক কাজের জন্য জেলা পর্যায়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদ সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু জেলার সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মূল দায়িত্ব পূর্বের ন্যায় ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের হাতেই অর্পিত রয়েছে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটগণ জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি। জেলা পুলিশ সুপারগণ উপর্যুক্ত কমিটির সদস্য। Magistrate শব্দটি ল্যাটিন Magistratus শব্দ থেকে এসেছে যার মানে Administrator বা শাসক। ভারতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে বাংলায় বলা হয় ‘জেলা শাসক’। ‘শাসক’ শব্দটি সহনীয় করে বাংলাদেশে ‘প্রশাসক’ শব্দটি গ্রহণ করা হয়েছে। ‘জেলা প্রশাসক’ বহুল ব্যবহৃত District Magistrate শব্দের পরিবর্তিত বাংলারূপ যা এখনো ভারতে জেলা শাসক নামে অভিহিত করা হয়।

জেলা প্রশাসক বাংলাদেশের জেলার প্রধান প্রশাসনিক ও রাজস্ব কর্মকর্তা। তিনি একাধারে জেলা প্রশাসক, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (District Magistrate), জেলা কালেক্টর (District Collector) ও ডেপুটি কমিশনার (Deputy Commissioner)। ফলে তিনি একইসাথে আইনশৃঙ্খলা, ভূমিপ্রশাসন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সমন্বয় এবং সাধারণ ও স্থানীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। জেলা প্রশাসক জেলাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রতিনিধি। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানমতে বাংলাদেশ মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার হওয়ায় জেলা প্রশাসকগণ জেলাতে জাতীয় সরকারের প্রতিনিধি। তিনি ঐ জেলার সবকিছুর জন্য জাতীয় সরকারের নিকট জবাবদিহি করেন। তিনি সরাসরি সরকার প্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে যোগাযোগকারী ক্ষমতাপ্রাপ্ত জেলার একমাত্র কর্মকর্তা। জেলা প্রশাসক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশ ও তত্ত্বাবধানে কাজ করেন। তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের প্রশাসন ক্যাডার যা বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস নামে পরিচিত সার্ভিসের জেষ্ঠ পর্যায়ের সদস্য ও সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ আমলা। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন ক্যাডার হতে পদোন্নতিপ্রাপ্ত সরকারের উপসচিবগণের মধ্য হতে জেলা প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। Warrant of Precedence, 1986 অনুসারে উপসচিব এর পদমর্যাদার ক্রম ২৫ হলেও জেলা প্রশাসকের পদমর্যাদার ক্রম ২৪। তবে জেলা প্রশাসক শব্দটি ডেপুটি কমিশনার শব্দের বঙ্গানুবাদ নয়, বরং দুটো আলাদা পরিচিতিকে নির্দেশ করে। বর্তমান বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় জেলা প্রশাসক শব্দটির সর্বব্যাপী প্রয়োগ সুপ্রতিষ্ঠিতভাবে লক্ষ করা যায়। বিশেষত সরকারি দপ্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলকভাবে গৃহীত হওয়ার কারণে কেবলমাত্র ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাজের ক্ষেত্রেই নয়, কালেক্টর বা ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট বা ডেপুটি কমিশনারের সামগ্রিক কাজের ক্ষেত্রে একক বাংলা প্রতিশব্দ হিসেবে জেলা প্রশাসক এর ব্যবহার প্রায়োগিক ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। জেলা প্রশাসক জেলার চিফ প্রটোকল অফিসার।

আজ সারাবিশে^ মহামারি হিসাবে ঘোষিত করোনা ভাইরাসে আমাদের বাংলাদেশও বিপর্যস্ত। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সারা বাংলাদেশ ব্যাপি জনসেবায় কাজ করে যাচ্ছে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ব্যক্তি স্বেচ্ছাসেবীরা। তবে বাংলাদেশে প্রতিটি জেলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে জেলা প্রশাসকগণ। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশনায় জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে মাঠে, বাজারে, গ্রাম ও মহল্লায় সার্বিক দ্বায়িত্ব ও প্রশাসনিক নির্দেশনা দিয়ে করোনা মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে যাচ্ছেন।

মহামারী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও তার স্থানীয় প্রশাসন । সঙ্কটের এ মুহূর্তে করোনা যুদ্ধে জীবন বাজি রেখে সাধারণ জনগণের জীবন বাঁচানোর তাগিদে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে করোনাভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে সকলের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে মানবতার জননী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যে সতর্কবাণী দিয়েছি এই সতর্কতা মেনে চলবেন। তাহলে অনেক জীবন রক্ষা পাবে। প্রধানমন্ত্রী বাজারে পণ্য সরবরাহ সঠিক রাখার এবং দ্রব্যমূল্য মানুষের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে প্রত্যেক জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসন এর প্রতি তার নির্দেশনা পুনর্ব্যক্ত করেন। কেবল নাগরিকদের ঘরে রাখা নয়; ঘরে বা বাইরে থাকা অবস্থায় তাদের নানা অসুবিধায় জেলা প্রশাসক ও তার স্থানীয় প্রশাসন কে আমরা পাশে এসে দাঁড়াতে দেখছি। ঘরে ওষুধ-খাদ্য নেই, জেলা প্রশাসক তার স্থানীয় প্রশাসন টিমের মাধ্যমে পৌঁছে দিচ্ছে । হাসপাতালে যেতে হবে, নাগরিকরা শরণাপন্ন হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনের । বস্তুত গত কয়েক সপ্তাহে আমরা জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় প্রশাসনের যে ‘মানবিক মুখ’ দেখেছি, তা আগে কখনও কল্পনা করতে পারিনি । করোনাভাইরাসের দুঃসময়ে জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় প্রশাসনের জনঘনিষ্ঠ ও মানবিক ভূমিকা যেন একটি নতুন ভাবমূর্তি বিনির্মাণ করেছে। যা ইতিহাসের পাতায় বিরল হয়ে থাকবে। তবে সারা বাংলাদেশের জেলা প্রশাসক গণ যে কাজ করতেছে তা সাধারন জনগনের মাঝে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সারা বাংলাদেশের জেলা প্রশাসক গণ ও তার স্থানীয় প্রশাসন আছে বলেই সাধারণ মানুষ ভালো কিছুর স্বপ্ন দেখে।

এছাড়া করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে ডাক্তার ও নার্সদের অবদান আজ বিশ্বের প্রতিটি মানুষের কাছে স্বীকৃত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডাক্তার ও নার্সদেরকে করোনা মোকাবেলায় বিশেষ অবদানের জন্য হিরো হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে ডাক্তার ও নার্স’রা নিজের জীবন বাজি রেখে সামনের সারির সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে কাজ করছেন এবং সর্ব মহলে তা প্রশংসীত হচ্ছে। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় জেলা প্রশাসক ও তার স্থানীয় প্রশাসন, ডাক্তার এবং নার্স’রা কোন পুরস্কার বা প্রনোদনার আশায় নয়, শুধুমাত্র গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আবার এই সংকট মোকাবিলায় এক শ্রেণির মুনাফাখোর ও মজুতদার বাজার অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে। এইজন্য জেলা প্রশাসক ভ্রাম্যমাণ আদালত বসাচ্ছে। আশা করি জেলা প্রশাসকরা পাশেই থাকবেন এভাবেই। যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের জেলা প্রশাসক ও তার স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ে সময়োপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন বলেই দিশেহারা ইউরোপ-আমেরিকার তুলনায় এখনো অনেক ভালো অবস্থায় আছি আমরা। আমি সারা বাংলাদেশের জেলা প্রশাসক ও তার স্থানীয় প্রশাসনের সাফল্য কামনা করি। আসুন আমরা এই প্রকৃত মানবসেবিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।

মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ
সম্পাদক,
মানুষের কল্যাণে প্রতিদিন

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
      1
23242526272829
30      
  12345
20212223242526
2728293031  
       
15161718192021
2930     
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
    123
25262728   
       
     12
31      
   1234
262728    
       
  12345
2728     
       
   1234
       
     12
31      
1234567
891011121314
15161718192021
2930     
       
    123
11121314151617
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
23242526272829
3031     
      1
       
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
       
2930     
       
    123
18192021222324
25262728293031
       
28293031   
       
      1
16171819202122
30      
   1234
       
14151617181920
282930    
       
     12
31      
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
       
© All rights reserved © MKProtidin.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com