মা-ই চান তার সন্তান হোক সেরা। ব্যতিক্রম ছিলেন না সান ও মুনের মা। স্কুলের প্রতিযোগিতায় ছেলেদের হার তাই তাকে কষ্ট দিত। করে দিত অশ্রুসজল। সইতে না পেরে কখনও কখনও হেরে ঘরে ফেরা দুই ছেলের পিঠে কষেও দিতেন দু-চারটা! এসএ গেমসের সোনা জিতে ঘরে ফেরার পরও মায়ের চোখে পানি দেখে তাই হাসি পেয়ে গিয়েছিল হাসান খান সানের। ছোটবেলার সেই পিটুনির কথা মনে করিয়ে দিয়ে মজা করেছিলেন মায়ের সঙ্গে।
করোনাভাইরাস প্রকোপের এই দুঃসময়ে দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে (এসএ গেমস) সোনা জয়ী অ্যাথলেটরা মানুষের কল্যাণে প্রতিদিন কে শোনাচ্ছেন তাদের সুখস্মৃতির গল্প। সান ফিরে তাকালেন দশ বছর পেছনে। শোনালেন জয়ীর বেশে ঘরে ফেরার পর মায়ের ভালোবাসার পিটুনির প্রতিদানের গল্প।
২০১০ এসএ গেমস। আয়োজক বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক শ্রেষ্ঠত্বের এই মঞ্চে এর আগে লেখা হায়নি কারাতে ইভেন্টে সোনা জয়ের গল্প। সানও তাই মুখিয়ে ছিলেন। সব বাধা পেরিয়ে ফাইনালে ওঠার পর তার আরও বেশি করে মনে পড়ে যায় ছেলেবেলার কথা। স্কুলে মোরগ লড়াইয়ে হেরে ঘরে ফেরার দিনগুলো। যে দিনের স্মৃতি আওড়াতে গিয়ে সোনা জয়ী এই অ্যাথলেট হেসে ওঠেন আপন মনে।
“আমরা দুই ভাই যখন ছোট ছিলাম, স্কুলে মোরগ লড়াইয়ে নেমে শুরুর দিকেই যারা বাদ পড়ত, দেখা যেত তার মধ্যে আমি আর আমার ভাই, দুজনই আছি। তখন আম্মা অনেক কষ্ট পেত। কষ্ট সহ্য করতে না পেরে কখনও মারত। কান্নাকাটি করত।”
“কিন্তু যখন সাফে গোল্ড পেলাম, তখন মুদ্রার ওপিঠ দেখা হয়ে গেলো। মহল্লায় আগে যারা সেভাবে তাকাত না, বাড়ি ফেরার আগে তারাই দিল ফুলের মালা।”
“এরপর ঘরে ফিরে দেখি আম্মা কাঁদছেন! আম্মার কান্না দেখে আমাদের দুজনেরই হাসি পেয়ে গেল। বললাম, ‘স্কুলে মোরগ লড়াই হারতাম বলে তুমি কান্না করতে, মারতেও। আজ সোনা জিতে ঘরে ফিরেছি, আজও কান্নাকাটি করছ! আজও কি মারবে নাকি? (হাসি)।”