এটি কবি গুরুর লেখা চায়ের বিজ্ঞাপন। তখন ভারতবর্ষে অনেক চা-বাগান গড়ে উঠেছে। কিন্তু বাঙ্গালি চা ভক্ত হয়ে উঠেনি তথা চা এর কারবার ঠিকমতো জমে উঠেনি। তো, ব্যবসা জমাতে হলে ভেতো বাঙ্গালিকে চা ভক্ত করে তুলতে হবে। তথাস্থ, লিপটন কোম্পানির লোকজন কবিগুরু সমীপে হাজির, তাদের বিজ্ঞাপনে কবিগুরুকেই প্রয়োজন। তখন কবিগুরু ছোট্ট কবিতাকারে লিখে দিলেন উপরোক্ত চায়ের বিজ্ঞাপন। তবে কেটলি কেন কাতলি হয়েছে তা কিন্তু অজানাই রয়ে গেছে।
বিজ্ঞাপন লিখতে কবিগুরু যে ধারার পথ প্রদর্শক তা হচ্ছে,, অল্প সময়ে অল্প কথায় বেশী বোঝানোর ক্ষমতা এবং জনপ্রিয় করে তোলা।
যেমন, ব্রিটিশ কোম্পানি ক্যাডবেরির “বোর্ণভিটা” এর বিজ্ঞাপনে তিনি লিখেছিলেন,” বোর্ণভিটা সেবনে উপকার পাইয়াছি”। তবে এই বোর্ণভিটা সেবনের আগেই তাঁর বুদ্ধি- ভিটা আলোকিত হয়েছিলো কোন রবির আলোয় তা কিন্তু বিশ্ববাসী জ্ঞাত।
সে সময়ের বিখ্যাত মিষ্টি “জলযোগ” এর বিজ্ঞাপনে কবি লিখলেন, “জলযোগের বানানো মিষ্টি আমি চেখে দেখেছি। এটা আমাকে তৃপ্তি দিয়েছে”।
আবার দ্বারিকের মিষ্টির বিজ্ঞাপনে তিনি লিখেছিলেন,” রাসনার সেরা রাস, রাসনা”
বাঙ্গালির ভেজাল রোগ সেকালেও ছিলো তাও কবির বিজ্ঞাপনের ভাষায় ফুটে উঠেছে। শ্রীঘৃত এর বিজ্ঞাপনে কবি লিখেছেন,” বাংলায় ঘিয়ের ভেজাল বাঙালীর অন্ত্রের ভেজালকেও অনিবার্য করে তুলেছে। আমি আশা করি শ্রীঘৃত বাঙালীর এই ভেজাল রোগের প্রতিকার করিবে”। কবি গুরুর লিখা বিজ্ঞাপনে শ্রীঘৃতের কাটতি বাড়িলেও বাঙ্গালীর ভেজাল রোগের নিরাময় আজও সুদুর পরাহত…..!!!
(পর্ব-৩)
ধৈর্য্য সহকারে পড়ার জন্য সকল’কে আন্তরিক ধন্যবাদ।
লেখকঃ বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির আইন প্রশিক্ষক ✍ হাসান হাফিজুর রহমান।