রাজশাহী ব্যুরোঃ রাজশাহী নগরীতে প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযানে ভাঙা পড়েছে এক প্রতিবন্ধী পরিবারের বাড়িঘর। নগরীর পঞ্চবটি খরবোনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভাঙা হয় বাড়িটি। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধা ও শিশুসহ আওয়ামী ওই পরিবারের ১৫-২০ সদস্য। আর সড়কের পাশে রাখা হয়েছে গবাদিপশুগুলোকে। তবে জমির বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও বিনা নোটিশে বাড়ির দালান ও জিনিসপত্র ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে বলে পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ।
ভুক্তভোগীরা হলেন- নগরীর পঞ্চবটি খরবোনা এলাকার মৃত আব্দুল কাদেরের স্ত্রী আয়েশা বিবি (৬৫), তার ছেলে আক্কাস আলী, আনিসুর রহমান, মুরাদ আলী ও সুরাজ হোসেন। এদের তিনজনই প্রতিবন্ধী। বাড়িতে বৃদ্ধা আয়েশার দুই মেয়েও ছিলেন। তারমধ্যে একজন গর্ভবতী। শিশুসন্তানও রয়েছে তাদের দুই বোনের।
রবিবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটির দালান ভেঙে লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে। পাশেই রাখা হয়েছে আসবাবপত্রসহ যাবতীয় জিনিসপত্র। আর বেশ কয়েকটি ছাগল বেঁধে রাখা হয় বাঁশের বেড়ার সাথে। এছাড়া তাদের বাড়িতে গরু ছিল বেশ কয়েকটি। সেগুলো পাশে বাঁধের ওপর বেঁধে রাখেন তারা।
ভুক্তভোগী আয়েশা বিবি বলেন, প্রায় ৮০ বছর থেকে এ বাড়িতে বসবাস করে আসছিলাম। স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে পাশের একটি জমি নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলমান রয়েছে। কিন্ত উল্টো তারাই উচ্ছেদ মামলা করে আমাদের বিরুদ্ধে। তবে ওই মামলার কোনো নির্দেশনা বা নোটিশ আমরা পাইনি। নিয়ম না মেনে হঠাৎ করে এসে আমাদের বৈধ জমির বাড়িঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে। আমরা এখন যাব কোথায়? প্রতিবন্ধী ছেলে, গর্ভবতী মেয়ে ও ছোট ছোট নাতি-নাতনি এবং গবাদিপশু নিয়ে থাকবো কোথায়? মুছার্ যেতে যেতে সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকতার্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এসময় স্থানীয় নারী কাউন্সিলর নাদেরা বেগম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বলেন, নিজস্ব জমিতেই অনেকদিন থেকে এই প্রতিবন্ধী পরিবারটি বসবাস করে আসছিলেন। পরিবারটি একেবারেই অসহায়। আমি নিজেই প্রতিবন্ধী ভাতা করে দিয়েছি। তারা সকলেই নিয়মিতভাবে আওয়ামীলীগকে ভোট দিয়ে আসছেন। অথচ বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না করে এভাবে বাড়িঘর ভেঙে ফেলা হলো। এ বিষয়ে নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, আদালতের নির্দেশে উচ্ছেদ অভিযন চালিয়ে নিয়ম মেনেই ঘরবাড়ি ভাঙা হয়েছে।