ঝালকাঠিতে চলছে মা ইলিশ নিধনের মহোৎসব চলছেই। সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে দিন-রাত চলছে মা ইলিশ শিকারের প্রতিযোগিতা। স্থানীয় প্রায় চার শতাধিক জেলে আধারে আবডালে প্রকাশ্যে প্রতিদিন নদীতে শিকার করছেন ইলিশ। আর ওইসব ইলিশ বিক্রিও হচ্ছে প্রকাশ্যেই। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায়। এক ফেজবুক ব্যবহারী তার টাইম লাইনে লিখেছে ‘নলছিটিতে মাছের কেজি ১০০ টাকা’। বাস্তবেও এমন তথ্য মিলেছে উপজেলার ভৈরবপাশা এলাকায় নদীতে রাতের আধারে মাছ ধরে গোপনে পানির দামে বাড়ি বাড়ি পৌছে দিচ্ছে জেলেরা। স্থানীয় মৎস্য বিভাগের অদূরদর্শিতা ও দায়সারা অভিযানের কারণে অসাধু জেলেরা এ বছর অবাধে চালাচ্ছে মা ইলিশ নিধন। আবার মৎস বিভাগ ও পুলিশের প্ররোচনায় মাছ শিকারের অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। মাছ সহ আটক করে উৎকোচের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ হরমেশাই পাওয়া যায়। রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া গ্রামের বিষখালী নদীতে স্থানীয় প্রভাবশালীদের তত্ত্বাবধানে মাছ শিকার বেশ কয়েক বছর ধরেই চলছে প্রকাশ্যে। থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার পূর্বেই মাছ ভাগ ভাটোয়ারা হয়ে যায় বলে নিরীহ গ্রামবাসীর অভিযোগ। এই এলাকায় কেউ অপরাধ করে ফেঁসে গেলে প্রভাবশালী এক জনপ্রতিনিধির মধ্যস্থতায় সমঝোতা হয়ে যায়। ফলে অনেকেই পার পেয়ে যান তার বধাণ্যতায়। শনিবার দুপুরে রাজাপুর ও নলছিটিতে ৩ জেলেকে মাছ ধরার সময় আটক করে কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রকাশ্য দিবালোকে এবং রাতের অন্ধকারে জেলেরা অবাধে মা ইলিশ ধরছে। জেলার নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীর সরই, মাটিভাঙ্গা, ফেরিঘাট, নাইয়াপাড়া, খোঁজাখালী, অনুরাগ, দপদপিয়া পুরাতন ফেরিঘাট, ভবানিপুর, হদুয়া, বিষখালী নদীর ভেরনবাড়িয়া ও নলবুনিয়া খেয়াঘাট, রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া, বাদুরতলা এলাকার নদীতে শত শত জেলেকে উৎসবমুখর পরিবেশে মাছ ধরতে দেখা গেছে। তাদের নেই কোন আতঙ্ক। যদিও মাঝেমাঝে সরকারি ভাবে দু’একটি ট্রলার মহড়া দিলেও এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যেতে না যাওয়ার পূর্বেই খবর পেয়ে যায় জেলেরা। ঘন্টা খানেক জাল পেতে রাখলেই শত শত ইলিশ ধরা পড়ছে জালে। জেলেরা প্রতিদিন এসব এলকায় শত শত মণ ইলিশ শিকার করে নির্বিঘেœ বিক্রি করছে।
স্থানীয়রা জানান, সরকারিভাবে কড়াকড়ি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও এক শ্রেণীর লোভী জেলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরছে। সকাল ১০টায়, দুপুর ৩টায়, রাত ১০টায় ও ভোর ৪টায় প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে অবাধে এ মা ইলিশ নিধন করছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিগত বছরগুলোতে যেভাবে অভিযান পরিচালিত হতো এ বছর তেমনটা হচ্ছে না।
এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে এলাকাবাসী উপজেলার ভৈরবপাশা এলাকায় সুগন্ধা নদী সংলগ্ন একটি খাল খেকে নৌকা ও জালসহ তিন জেলেকে আটক করে মৎস্য কর্মকর্তার হাতে তুলে দেন স্থানীয়রা। পরে তাদেরকে রহস্যজনক কারণে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
নলছিটির ভৈরবপাশা ইউনিয়ন সাবেক চেয়ারম্যান নলছিটি উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা আ. হক চেয়ারম্যানের ভাই দুলাল, রুহুল আমিন মল্লিক, পারভেজ মল্লিকের নেতৃত্বে ভৈরবপাশা এলাকায় অসাধু জেলেরা অবৈধভাবে মৎস স্বীকার করে বলে এলাকাাবসী জানিয়েছে।