আশফাক আহমদ,বাহরাইন প্রতিনিধি :
বাহরাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড.আব্দুল লতিফ বিন রাশিদ আল জায়ানির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাহরাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত ড.মো. নজরুল ইসলাম ।
২০ মার্চ রবিবার বাহরাইন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সৌজন্যে সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ ও বাহারাইনের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন কর্তৃক প্রেরিত ডিসেম্বর ২০২১ সালে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেন এবং আমন্ত্রণ পত্রের একটি কপি তাঁকে আবার হস্তান্তর করেন। বাহরাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর আমন্ত্রণ পত্রটি স্বাদরে গ্রহণ করেন এবং শীঘ্রই ঢাকা সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম কোভিডকালীন সময়েও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রার সাফল্যগাথা তুলে ধরেন। বিশেষ করে তিনি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিক ঈর্ষণীয় হার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সক্ষমতা অর্জনে বাংলাদেশের অভাবনীয় অগ্রগতির বিষয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া তিনি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম বাহরাইন পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে অবহিত করেন এবং বাহরাইন সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
করোনা পূর্ববর্তী সময়ে দেশে গিয়ে ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া প্রায় ১০০০ প্রবাসীদের বাহরাইনে ফিরে আসতে পারছেন না উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, এ বিষয়ে বাহরাইন সরকারের প্রাসঙ্গিক সকল কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া প্রবাসীদের তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে কিন্তু বিষয়টি এখনো সুরাহা হয়নি। তিনি আটকে পড়া এ সকল প্রবাসীদের বাহরাইনে ফিরিয়ে আনতে বাহরাইনের বাদশাহর সদয় বিবেচনার জন্য অনুরোধ করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রী এই বিষয়টি নিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে ফলপ্রসূ সিদ্ধান্তের আশ্বাস প্রদান করেন। এছাড়া, ভিসা সহজীকরনের বিষয়েও রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র মন্ত্রীর ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ কামনা করেন। রাষ্ট্রদূত দু’দেশের নাগরিকদের মধ্যে অধিকতর যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কূটনৈতিক এবং অফিসিয়াল পর্যায়ে ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত ইতিমধ্যে চূড়ান্তকৃত চুক্তিটি স্বাক্ষরের বিষয়ে প্রস্তাব করেন।
২০১৫ সালে Foreign Office Consultation (FOC) এর জন্য দু’দেশের মধ্যে একটি MOU স্বাক্ষরিত হয়। রাষ্ট্রদূত দু’দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াসহ সকল ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে FOC হওয়াটা জরুরি মর্মে উল্লেখ করেন এবং এ বিষয়ে বাহরাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করেন। তিনি আরো বলেন, ঢাকা প্রথম FOC আয়োজনে বেশ আগ্রহী এবং এর প্রস্তুতি হিসেবে দু’দেশের সচিব পর্যায়ে সফর হতে পারে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী রাষ্ট্রদূতের সাথে এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আশ্বাস প্রদান করেন।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাহরাইন সরকার থেকে দূতাবাসের জন্য জমি পেলে বাংলাদেশ সরকার বাহরাইনে নিজস্ব জমিতে দূতাবাস নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ প্রেক্ষিতে, বাহরাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসকে নিজস্ব জমি বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি বাহরাইন সরকার গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে বলে বাহরাইন পররাষ্ট্র মন্ত্রী অবহিত করেন। রাষ্ট্রদূত তাঁকে বাংলাদেশে বাহরাইনের দূতাবাস স্থাপনের আহবান জানান। এছাড়া, বাহরাইনের বাদশাহ কর্তৃক প্রদত্ত জমিতে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে বাংলাদেশ স্কুল বাহরাইনের নির্মাণ প্রকল্পের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে অবহিত করেন এবং এ ব্যাপারে তার সহযোগিতা কামনা করেন।