বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পাওয়া প্রবীণ সাংবাদিক সুভাষ চৌধুরীর লেখার কৌশল অনুসরন করে সাংবাদিকদের এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানানো হয়েছে। একজন ভালো সাংবাদিক হবেন একজন ভালো লেখক এবং বহু তথ্যের ভান্ডার। তিনি প্রতিনিয়ত সমাজকে দেখবেন এবং যা দেখবেন তা সংবাদ আকারে তুলে ধরে জনকল্যানে কাজ করে যেতে পারেন। একইসাথে গনতান্ত্রিক বিকাশেও তিনি ভালো রিপোর্টের মাধ্যমে সহায়তা করতে পারেন।
বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা জেলার জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, সাতক্ষীরার প্রবীন সাংবাদিক দৈনিক যুগান্তর ও এনটিভির সুভাষ চৌধুরীকে বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পাওয়ায় সংবর্ধিত করে। এসময় তার হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি সম্মানজনক ক্রেস্ট।
শহরের পলাশপোলে জেলা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের এই সংবর্ধনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দৈনিক কালের চিত্র সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ। দৈনিক দৃষ্টিপাত সম্পাদক জিএম নূর ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক ডা. আবুল কালাম বাবলা। সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ, সাপ্তাহিক সূর্যের আলো সম্পাদক ওয়ারেশ খান চৌধুরী, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক মোঃ আলী সুজন, সাপ্তাহিক মুক্তস্বাধীন পত্রিকার সম্পাদক মোঃ আবুল কালাম, টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের আহবায়ক মোঃ আবুল কাশেম, রেডিও নলতার শেখ ফারুক হোসেন, ভয়েস অবস সাতক্ষীরার আরকে বাপ্পা প্রমুখ সাংবাদিক।
জেলা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক প্রভাষক কেএম আনিসুর রহমানের স ালনায় সংবর্ধনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মহিদার রহমান।
প্রধান অতিথি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ বলেন, কর্ম দিয়েই মানুষকে চেনা যায়। সুভাষ চৌধুরী একাধারে একজন সফল শিক্ষক। একইসাথে তিনি শীর্ষস্থানীয় একজন সাংবাদিক। তিনি সাংবাদিকতায় একটি মহীরূহ হয়ে উঠেছেন। সাংবাদিকতার একজন দিকপাল। এই গুণী সাংবাদিকের হাত ধরে বহু সাংবাদিক প্রতিষ্টা লাভ করেছেন। অসুস্থ অবস্থায় এই ৭৪ বছর বয়সেও তিনি তার লেখনী থেকে সরে যান নি মন্তব্য রাকে তিনি বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ তাকেই জেলার শ্রেষ্ট সাংবাদিক হিসাবে সম্মানিত করায় আমরা সাতক্ষীরাবাসী সম্মানিত হয়েছি। জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন এক সংবর্ধনা জানানোয় আমরাই সম্মানিত হয়েছি।
বিশেষ অতিথি ডা. আবুল কালাম বাবলা বলেন, আমরা যে যেটুকু কাজ করবো সেটুকু সম্মান পাবো। আর এই সম্মান পেতে হলে অবশ্যই নিজেকে ভালো কর্মের সাথে যুক্ত থাকতে হবে। সাংবাদিক সুভাষ চৌধুরী ভালো ভালো রিপোর্ট করে আমাদের সমাজকে সমৃদ্ধ করেছেন। আর এই কারনেই তিনি মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড লাভ করেছেন। আমরা তার দীর্ঘজীবন কামনা করি।
বিশেষ অতিথি আবুল কালাম আজাদ বলেন, সুভাষ চৌধুরীর লেখনী ক্ষুরধার। তিনি নির্ভীকভাবে সাহসিকতার সাথে সব ভয়ভীতি উপেক্ষা করে কেবলই লিখে গেছেন। তিনি পুরষ্কারের জন্য লেখেননি। সামাজিক কল্যানের জন্যই তিনি লিখেছেন। লেখার স্বীকৃতি হিসাবে তিনি সম্মাননা লাভ করেছেন। এতে আমরা গর্ববোধ করি। আমরা চাই তার সমস্ত লেখনী দিয়ে একটি প্রকাশনা প্রকাশ করা দরকার। এ ধরনের উদ্যোগ নতুন সাংবাদিকদের জন্য একটি প্রেরনা হয়ে দাঁড়াবে। তিনি সাতক্ষীরার প্রথম ব্যক্তি যিনি সাতক্ষীরার ইসলামপুরের লাঠিয়াল বাহিনীর সন্ত্রাস লিখে কারাভোগ করেছিলেন।
বিশেষ অতিথি ওয়ারেশ খান চৌধুরী বলেন, সুভাষ চৌধুরীর সাংবাদিকতার বহর দেখে আমি প্রথম আমার পত্রিকার পক্ষ থেকে ৩ বছর আগে তাকে সংবর্ধনা দিয়েছিলাম। বসুন্ধরা গ্রুপ আজ সেই পথ অনুসরন করেছে।
বিশেষ অতিথি মোঃ আলী সুজন বলেন, প্রবীন সাংবাদিক সুভাষ চৌধুরীর লেখা এতই চমৎকার ছিলো যে, দৈনিক দৃষ্টিপাতের যাত্রা শুরু থেকে দীর্ঘদিন যাবত ব্যাকপেজে একটিমাত্র ছবি দিয়ে ফিচার লিখে ফেলতেন। এতে পাঠকরা খুবই আকৃষ্ট হতো। তার ভালো লেখার প্রশংসা সকল মহলে রয়েছে। তিনি সকল বিষয়ের ওপর লিখে সমাজকে আলোকিত করেছেন।
বিশেষ অতিথি আবুল কাশেম বলেন, আমি গভীর রাতেও তার কাছে টেলিফোন করে কোন বিষয়ে তথ্য সহায়তা নিতে চাইলে তিনি স্বল্পতম সময়ের মধ্যে আমাকে সরবরাহ করেছেন। আমি তার কোন লেখায় কোন ধরনের বিচ্যুতি কখনও লক্ষ্য করিনি। আমার প্রত্যাশা, তিনি তার আত্মজীবনী লিখবেন এবং তার সকল সংবাদ নিয়ে একটি প্রকাশনা বের করবেন।
বিশেষ অতিথি আবুল কালাম বলেন, সুভাষ কাকা সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেডে শায়িত অবস্থায় রয়েছেন। পাশে তার ছেলেকে বসিয়ে ডিক্টেশন দিয়ে রিপোর্ট লিখিয়েছেন আমি এমনটি দেখে অবাক হয়েছি। আমি তার সাংবাদিকতায় এই আত্মনিবেদনকে সালাম জানাই।
স্বাগত বক্তব্যে ডা. মহিদার রহমান বলেন, আমরা তাকে সংবর্ধিত করতে পারায় নিজেরা গর্ববোধ করছি।
সভার সভাপতি দৈনিক দৃষ্টিপাত সম্পাদক জিএম নূর ইসলাম বলেন, আমি এমন কোন সময় দেখিনি যখন তিনি নিউজ ছাড়া অন্য কোনকিছু নিয়ে ব্যস্ত থেকেছেন। দূর্যোগে, দূর্বিপাকে তিনি কারো ওপর নির্ভর না করে নিজেই সেখানে হাজির হয়েছেন। তার রিপোর্টের গুনের সীমা নেই। আমি একজন নিবেদিত কর্মী সাংবাদিক হিসাবে কেবলমাত্র সুভাষ দা’কেই চিনতে পেরেছি। তার লেখনী থামাতে গুন্ডা ভাড়া করার খবরও আমরা জানতাম। তিনি রিপোর্টের যেখানে হাত দিয়েছেন সেখানেই সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছেন। একজন গুনী ও প্রথিতযশা সাংবাদিক হিসাবে তার জুড়ি মেলা ভার। তার সম্পর্কে বলতে গেলে পুরো একদিন সময় লেগে যায়।