দুর্নীতি কাল ব্যাধির মত ছেয়ে আছে এবং এই দুর্নীতির কালব্যাধির গোড়াপত্তন ৭৫ এর পরের শক্তিগুলো করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। রোববার সকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠকের শুরুতে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একটি যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশকে এগিয়ে নেয়া শুরু হলেও ১৫ আগস্ট তা থেমে যায়। ১৫ আগস্টে ৪ নেতাকেও কারাগারে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়। সেই বিচারও তারা বন্ধ করে। তাদেরকেই ক্ষমতায় বসায়।
জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির মতো কালব্যাধি থেকে দেশকে মুক্ত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সবাইকে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ সৃষ্টিতে বিগত সরকারের প্রচ্ছন্ন সাপোর্ট ছিল। সমাজকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতির মত কাল ব্যধি থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। সেই লক্ষ্য অর্জনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সবাইকে কাজ করতে হবে।
এ সময় মন্ত্রনালয়কে অগ্রণী ভুমিকা পালন করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গী, সন্ত্রাস দমনে মন্ত্রনালয় যেভাবে সফলতার সাথে কাজ করে চলেছে একইরকমভাবে দুর্নীতি বন্ধ করার জন্যও লড়াই করতে হবে। দুর্নীতি নির্মূলের সুবিধার্থে উপজেলা পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন সংকট নিরসন করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লোকবল অনুযায়ী যানবাহন, জলযান ও পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। যানজট নিরসনেও এই মন্ত্রণালয়কে কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে অবশ্যই পরিকল্পনা মাফিক চাহিদাপত্র প্রণয়ন করতে হবে৷
শেখ হাসিনা বলেন, এই মন্ত্রণালয় বিশাল। জনবল ছিল না। পুলিশ, আনসার, কোস্টগার্ড থেকে শান্তিরক্ষা মিশনে আরো নারী সদস্য নিতে চায়।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করি। অর্থনৈতিক লক্ষ্য, মর্যাদা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার সুফল ঘরে ঘরে পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ শুরু করি। দেশকে যেন এগিয়ে নিতে পারি। সে সাথে আর গোয়েন্দা সংস্থা ভাল কাজ করছে। প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। অবশ্য প্রযুক্তির সুযোগ অপরাধীরাও নেয়। সেজন্য যুগোপযোগি করতে হবে। নজরদারির ব্যবস্থা নিচ্ছি আমরা। অনেকে সমস্যাগুলো তুলেও ধরতে পারেন না।
তিনি বলেন, জনবল, জনপ্রশাসনে নির্দেশ দিয়েছি। প্রস্তাব দেয়ার সময় রাজস্ব খাতে কতজন নিবেন, তার বিস্তারিত দিবেন। অপরাধীরা যেন সম্পৃক্ত না হয়ে সমাজে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে ব্যাপারে কাজ করতে হবে। রাষ্ট্র পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ উইংগুলো অবহেলিত ছিল। পুলিশের অবস্থা খুব করুন ছিল। ৯৬ এ এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের বাজেট দ্বিগুন করি। যারা সেবা দিবে, তাদের সমস্যাগুলোও তো দেখতে হবে। যারা জনগণের নিরাপত্তা দিবে, তাদের নিরাপদ ও ভাল থাকার ব্যবস্থা করা উচিত।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। অভিযান চলবে, কঠোর ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে হবে। মাদকাসক্তদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সহযোগিতা করতে হবে।
জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রন এখন সহজ হয়েছে। কারণ, অভিযান চলছে, সচেতনতাও বেড়েছে সব পর্যায়ে। জঙ্গিবাদ এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে আমাদের।