অদ্ভূত ধরনের চাল, রান্না করতে প্রয়োজন নেই কোন জ্বালানির। কুসুম বা গরম জলে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে নিলে বা ঠাণ্ডা জলে ৩০ মিনিট ভেজালে এই চাল ভাত হয়ে খাওয়ার উপযোগী হয়। নরম হওয়ার পর দই, কলা, দুধ বা গুড়ের সাথে বোকা চাউল খাওয়া হয়। ১৭ শতকে মোঘল’দের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় অহোম সৈন্যদের এটিই ছিলো প্রধান খাবার। এখনও অাসামের লোকজন “বোকা চাউল” জলখাবার হিসাবে খায়। মাঘ বিহুর এটিই অন্যতম প্রধান খাদ্য।
নামনি অসমের নলবাড়ি, বরপেটা, কামরুপ, গোয়ালপাড়া, দরং, ধুবুরি, চিরাং, বাক্সা, বঙাইগাঁও, কোকরাঝাড় জেলায় বোকা চাউলের আবাদ করা হয়। প্রধানতঃ শালি ধান হিসাবে জুন মাসে চাষ করা এবং ডিসেম্বর মাসে এই ধান কাটা হয়।
গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়য়ের জৈবপ্রযুক্তিবিদ্যা বিভাগ এই চালের ওপর গবেষণা করে এর পুষ্টিতত্ত্বগুলি চিহ্নিত করেছে। তাঁদের গবেষণা অনুসারে, কোমল চাউলে ১০.৭৩ শতাংশ ফাইবার ও ৬.৪ শতাংশ প্রোটিন থাকে এবং এই ধানের প্রজাতিতে মাত্র ৪ থেকে ৫ শতাংশ এমায়লোজ থাকে।
২০১৬ সালে নলবারির লটাস প্রগ্ৰেসিভ সেণ্টার এবং গুয়াহাটীর সেণ্টার ফর এনভারমেণ্ট এডুকেশন বোকা চাউলের ভৌগোলিক স্বীকৃতির জন্য আবেদন করলে ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে বোকা চাউল ভৌগোলিক স্বীকৃতি লাভ করে।
** জ্বালানী মুল্যের উর্দ্ধগতি, সময় সাশ্রয়, অলস রাঁধুনি কিংবা পরিবার থেকে দুরে থাকা নিঃসঙ্গ রন্ধনে অক্ষমদের কথা ভেবে কোনো বুদ্ধিমান কি এদেশে বোকা চাউল চাষে উৎসাহিত করবেন?
*** দৃষ্টি আকর্ষণ: কৃষিবিদ বন্ধুগণ
লেখকঃ বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির আইন প্রশিক্ষক হাসান হাফিজুর রহমান।