শারমীন সুলতানা মিতু: ১২ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার! জন্ম দিয়েছে “অত্যাচার” নামে আরেক শিশুর! ৫ লাখ টাকা দিয়ে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে পৌর কাউন্সিলর জিলাল উদ্দিন দুলাল! মীমাংসায় ব্যর্থ হওয়ায় ইন্টারনেটে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ধর্ষিতার পরিবারকে!
ধর্ষণের শিকার ১২ বছরের শিশু জন্ম দিয়েছে আরেক শিশু, যার নাম রাখা হয়েছে অত্যাচার। ধর্ষিতা ওই শিশুকে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার গিলারচালা গ্রামের হাজী আব্দুল মান্নানের ছেলে জহিরুল ইসলাম (৩০) জোরপূর্বক বাড়ির পাশে জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষিতা ওই শিশু অসুস্থ হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাই শিশু অন্তঃসত্ত্বা। ধর্ষিতা শিশুর বাবা ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। যাহার নং- ৫৫, তাং ২৩/০৯/২০১৮ইং ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/০৩) এর ৯(১) রুজু হয়। এতে আসামী গ্রেফতার হয় এবং পরবর্তী সময় বিজ্ঞ আদালত হতে জামিনে বাড়ীতে আসে।
কিন্তু বাড়িতে আসার পর অভিযুক্ত ধর্ষক বেপরোয়া হয়ে যায়। ততদিনে পৃথিবীর বুকে ভূমিষ্ঠ হয় একটি মেয়ে। বর্তমান ওই শিশুর বয়স পাঁচ মাস। ওই শিশুটির নাম অত্যাচার। এর দায় কে নিবে!
ওই ধর্ষকের সহযোগিতায় তার বাড়িতে থাকা অন্য ভাড়াটিয়া দিয়ে (৭ মে) সকালে পুনরায় জোরপূর্বক ওই শিশুকে ধর্ষণ করে নেত্রকোনা জেলার সদর থানার গাজার কান্দি গ্রামের হাবুল মিয়ার ছেলে সিজান (১৯)। পরে ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে ওই শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
এ ব্যাপারে ৫ জনকে অভিযুক্ত করে শ্রীপুর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ধর্ষিতা শিশুর বাবা। অভিযুক্তরা হলেন, নেত্রকোনা জেলার সদর থানার গাজারকান্দি গ্রামের হাবুল মিয়ার ছেলে সিজান (১৯),গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার গিলারচালা গ্রামের হাজী আব্দুল মান্নানের ছেলে জহিরুল ইসলাম (৩০), মোশারফ হোসেন (৪০), একই এলাকার পিতা অজ্ঞাত জাহিদ (৩৮) ও সেলিম (২০)।
শিশুটির স্বজন জরিনা খাতুন জানান, স্থানীয় কাউন্সিলর জিলাল উদ্দিন দুলাল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আমাকে মীমাংসা করার জন্য ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা জানান! কিন্তু আমি অস্বীকৃতি জানালে ধর্ষনের ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী বলছে এরকম জঘন্য অপরাধীদের বিচার করা হোক প্রকাশ্যে দিবালোকে। ধর্ষণকারী বরাবর ছাড় পেয়ে যাচ্ছে, কঠিন বিচারের দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে।
জিলাল উদ্দিন দুলাল মুঠোফোনে বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তবে কাউকে কোন প্রকার টাকার প্রস্তাব দিইনি। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা।
শ্রীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদুল ইসলাম জানান, অভিযুক্ত যুবককে আটক করা হয়েছে (ডিএনএ) টেস্টে প্রমাণিত হয়েছে জন্ম নেওয়া শিশুটির বাবা সিজান।