বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান এবং লোকমেলা’র উদ্বোধন আজ (বুধবার) বিকালে খুলনার ফুলতলা উপজেলার দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন (রিমি)। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উদযাপনে এবারের প্রতিপাদ্য ‘সোনার বাংলা স্বপ্ন ও বাস্তবতা: রবীন্দ্রনাথ থেকে বঙ্গবন্ধু’।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রবীন্দ্রনাথ বাস্তবকে বুঝতেন বলে তিনি এখনো প্রাসঙ্গিক। রবীন্দ্রনাথ মানুষের পরিশুদ্ধতার কথা ভাবতেন, মানবতার জন্য কাজ করতেন। জমিদার পরিবারে জন্ম নিলেও জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত থেকে শিক্ষা নিয়েছেন তিনি। তাঁর জীবদ্দশাতেই তার তিন পুত্র-কন্যার মৃত্যু হয় এবং রবীন্দ্রনাথের ৪২ বছর বয়সে তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়। তিনি কেবল প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করেননি বরং তাঁর শিক্ষা ছিলো বিশ^জনীন। তিনি যেমন বিজ্ঞানমনস্ক ছিলেন, তেমনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক। তাঁর কৃষি বিষয়ে উন্নত ভাবনার জন্য নিজের পুত্রকে কৃষি বিষয়ে বিদেশ থেকে উচ্চতর শিক্ষায় শিক্ষিত করেন। তিনি বিশ^ ভারতী, শান্তি নিকেতন প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, মানুষের জীবন-আচার-আচরণ হলো সংস্কৃতি। রবীন্দ্রনাথ সংস্কৃতিবান ও মানবপ্রেমী মানুষ ছিলেন। জমিদার হয়েও তিনি কখনো প্রজাদের সাথে জমিদারসুলভ আচরণ করেননি বরং মানুষের দু:খ-কষ্ট বোঝার চেষ্টা করতেন। রবীন্দ্রনাথের মানবপ্রেম ও স্বদেশ ভাবনাকে ধারণ করতে পারলে আমরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সক্ষম হবো।
খুলনা জেলা প্রশাসন আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা। খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মোঃ আলমগীর কবির। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফুলতলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা তাসনীম জাহান। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ফুলতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস মৃণাল হাজরা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। এর আগে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী তিন দিনব্যাপী লোকমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।