উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধিঃ সাবেক চেয়ারম্যান বদর খন্দকার নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল শিকদারকে প্রধান আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী নাজনীন বেগম বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার রাতে বর্তমান চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামী করে ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামী করে দায়ের করেন। মামলা নং ১৮। উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার অন্যতম আসামী মতিউর রহমান ওরফে মুন্নাকে (৩২) গত মঙ্গলবার রাতে কাশিয়ানী থানার সহযোগিতায় লোহাগড়া থানা পুলিশ গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার চর ঘোনাপাড়া এলাকা থেকে আটক করেন। আটক মুন্না বুধবার নড়াইলের সিনিয়র চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমাতুল মোর্শেদা’র আদালত ১৬৪ ধারায় স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্দী গ্রহন শেষে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব বিরোধের জের ধরে সাবেক চেয়ারম্যান বদর খন্দকারকে হত্যা করা হয়েছে। ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল শিকদারকে প্রধান আসামী করা হয়েছে। অন্য আসামীরা হলেন, ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ শেখ ও তার ভাই শ্রমিক নেতা পিকুল শেখ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক উপ-সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল আজাদ সুজন, লোহাগড়া ইউপি’র সাবেক সদস্য সুরুজ মোল্যা, চর কালনা গ্রামের আবু বক্কর খোকা মোল্যার ছেলে রবিউল ইসলাম তারু মোল্যা ও তার ভাই মতিউর রহমান মুন্নাসহ ১৬ জন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিল্টন কুমার দেবদাস বলেন, মামলার প্রধান আসামীসহ অন্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যহত রয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্য আসামীদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবো।
উল্লেখ্য: গত ২৪ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নিহত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বদর খন্দকার মোটর সাইকেলযোগে বাড়ি থেকে লোহাগড়া উপজেলা সদরে আসার সময় টি-চর কালনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একদল দুর্বৃত্ত তার মোটর সাইকেলের গতি রোধ করে দেশীয় অস্ত্র ধারালো ছ্যান ও রাম দা, দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে তার দুই হাত ও দুই পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে পালিয়ে যায়। মুমূর্ষ অবস্থায় এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পথিমধ্যে যশোরের নওয়াপাড়া নামক স্থানে পৌঁছালে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি মারা যান। নড়াইলের লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসেন বলেন, প্রধান আসামীসহ অন্যদের গ্রেফতারের জন্য সাঁড়াশী অভিযান চলছে। এ দিকে বুধবার বিকালে নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ জসিম উদ্দিন পিপিএম (বার) ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে নিহতের বাড়িতে যান। এ সময় তিনি নিহতের স্ত্রী, সন্তানসহ পবিারের সদস্যদের শান্তনা দিয়ে বলেন, খুব শিঘ্রই হত্যার রহস্য উন্মোচনসহ আসামীদের আইনের আওতায় আনা হবে।