গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, যেখানে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসা দেয়া যাবে, সেখানেই তাকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসা দেয়া হবে। যেহেতু তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে চাইছেন না, তাই আমরা তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসা নেয়ার প্রস্তাব দিব।এর আগে সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দফতরে ইউনাইটেড হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে আবেদন জমা দেন খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার। এতে বলা হয়, গত ৯ জুন কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতিসাপেক্ষে ৪ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কারা অভ্যন্তরে তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। উক্ত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে, খালেদা জিয়া গত ৫ জুন ‘মাইল্ড স্ট্রোকে’ আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে ভবিষ্যতের জন্য এ ধরনের বিষয় বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকির পূর্বাভাস বহন করছে। তাকে অনতিবিলম্বে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা প্রদান করা জরুরি এবং তার এ ধরনের সব চিকিৎসা ব্যয় আমরা নিজ/পারিবারিকভাবে বহন করবো।এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার পক্ষে ২ জন এসেছিলেন আমার কাছে। আমার সঙ্গে দেখা হওয়ার আগেই একটি পত্র দিয়েছেন। আমরা তাকে জানিয়েছি, বাংলাদেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল রয়েছে সেখানে নিতে চেয়েছি। কিন্তু তিনি সম্মত হননি। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, আইজি প্রিজন অন্যান্য সরকারি হাপাতালে তাকে চিকিৎসা নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। তাতে যদি তিনি সম্মতি দেন, তবে আমরা সেটা দেখবো। আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, আইজি প্রিজন খালেদা জিয়াকে বলেছেন, তিনি যদি সিএমএইচে যেতে চান সেখানে নিয়ে যাবো, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবো। মোট কথা সরকারি নিয়মে যা যা করা সম্ভব তার সব ধরনের প্রচেষ্টা নেয়া হবে। প্রাইভেট হাসপাতালটির চেয়েও সিএমএইচ হাসপাতাল অনেক সমৃদ্ধ। সেখানে অনেক বেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। এখন খালেদা জিয়া যে প্রতিক্রিয়া জানাবেন, আমরা তা দেখবো।নিজেদের খরচে ইউনাইটেড হাপাতালে চিকিৎসা করাতে চান তার পরিবার এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি ক্লিয়ারলি বলছি সরকারিভাবে সর্বোচ্চ যেখানে যাওয়া যায় সেই চেষ্টাই করছি। আমি মনে করি তার সিএমএইচ এ যাওয়া উচিত। সেখানে সরকারি হাসপাতালের চেয়ে উন্নত চিকিৎসা হয়। আশা করি, তিনি সেখানে চিকিৎসা করাতে রাজি হবেন বলেন মন্ত্রী।ইউনাইটেড হাসপাতালে আবেদনের বিষয়ে কামাল বলেন, এটার কোনো যুক্তি আছে বলে আমার মনে হয় না। আর সিএমএইচের মতো জায়গায় না যাওয়ারও কোনো যুক্তি আছে তাও আমার মনে হয় না। ইউনাইটেডের চেয়ে সিএমএইচ এ সুযোগ-সুবিধা বেশি।সিএমএইচে যদি খালেদা জিয়া যেতে সম্মত না হন, তাহলে কী করা হবে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তখন সিচুয়েশন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো, কী করা যায়। খালেদা জিয়া ঈদের আগে মুক্তি পাবেন কিনা বা কারাগারেই ঈদ করছেন কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, কোর্ট জানে, বিচার বিভাগ জানে।এ সময় সাংবাদিকরা জানতে চান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হলে সরকার প্রস্তুত কিনা? জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে আন্তরিক। প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। হঠাৎ পরিস্থিতি তো হঠাৎ-ই। তবে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা সব সময় প্রস্তুত।