স্টাফ রিপোর্টারঃ সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ২৮ জন অ-মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। তবে একটি চক্র পুনরায় তালিকায় নাম ওঠানোর নামে ফায়দা হাছিলে ব্যস্ত কিনা প্রশাসনের নজরদারী প্রয়োজন। কেননা অহেতুক সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চক্রটি ইতিমধ্যে অনেক ভুয়া সনদধারীর কাছ থেকে বিভিন্ন সময় অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ আছে। তারপরেও আবার তাদের কাছে চিঠি দিয়ে স্বাক্ষাতের সময় নির্ধারণ করেছে বলে জানা গেছে। অথচ নতুন করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভুক্তির কোনও সিদ্ধান্তই নেয়নি সরকার। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, যারা তালিকাভুক্তির জন্য ২০১৪ এবং ২০১৭ সালে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে (জামুকা) লিখিত ও অনলাইনে আবেদন করেছেন, কেবল তাদের আবেদন পত্র গুলোর ওপর শুনানি চলমান রয়েছে। ঐ শুনানি শেষে ১৫ ফেব্রুয়ারী খসড়া ও ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে বলে জানাগেছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) পরিচালক (যুগ্নসচিব) সেলিম ফকির জানিয়েছেন, ‘আপাতত নতুন করে কোনও বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম গেজেটভুক্ত করার সিদ্ধান্ত সরকারের নেই। ২০১৪ ও ২০১৭ সালে করা আবেদনপত্রগুলোর ওপর শুনানি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, ‘গেজেটে প্রকাশিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকার বিষয়ে অভিযোগ যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। এটি নিষ্পত্তির পর ১৫ ফেব্রুয়ারি খসড়া ও ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের কাজই মূল লক্ষ্য। এ ছাড়া ২০১৪ সালে অনলাইনে করা আবেদনগুলোর ওপর শুনানি তো চলছে।’একারনে ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ কালিগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদে সাক্ষাতকার গ্রহণের বিষয়টি একটি নিছক ষঢ়যন্ত্র মনে করেন অনেক মুক্তিযোদ্ধা। ইতিমধ্যে সে বিষয়টি আচ করতে পেরে খোদ কালিগঞ্জ উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা নির্বাহি অফিসার খন্দকার রবিউল ইসলাম “ইউএনও কালিগঞ্জ সাতক্ষীরার ফেসবুক আইডি”র মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাসে বলেছেন-বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা অন্য কোন নামে যাচাই-বাছাইয়ের নামে নোটিশ বা কোন ফোন নম্বর থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই ইত্যাদি কথা বলে হয়রানি করছে মর্মে শোনা গেছে। এ বিষয়ে কোনরকম আর্থিক লেনদেন না করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। কোন বিকাশ নম্বরে বা সরাসরি কোন ব্যাপারে কারো কথায় কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন করবেন না বা ভুয়া যাচাই-বাছাই এ অংশগ্রহণ করবেন না। 01754736571 নম্বরে ফিরতি কল করে জানানোর জন্য অনুরোধ করছি।
এদিকে কালিগঞ্জে উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি কর্তৃক বাতিল হওয়ার তালিকায় যারা যারা আছন তারা হলেন – ১। মোঃ আজিজুর রহমান, পিতা আব্বাস খান, গ্রাম লক্ষ্মীনাথপুর, ২। মোঃ শহিদুর রহমান, পিতা মৃত আব্দুল হান্নান, গ্রাম পানিয়া. ৩। মোছাঃ রোকেয়া সুলতানা, পিতা শেখ দীন মোহাম্মদ, গ্রাম মৌতলা, ৪। দীনেষ কুমার দাশ, পিতা মৃত পন্নালাল দাশ, গ্রাম বিষ্ণুপুর. ৫। সদর উদ্দীন আহম্মেদ, পিতা দেরজতুল্লাহ সরদার, গ্রাম ঠেকরা. ৬। মোঃ মুনসুর বিশ্বাস. পিতা মৃত মোহর আলী, গ্রাম পূর্ব নলতা. ৭। এসকে মনোয়ার হোসেন, পিতা এসকে আব্দুল মজিদ, গ্রাম মৌতলা, ৮। শেখ নুর আলী, পিতা শেখ এনায়েত মোল্লা, গ্রাম চৌবাড়িয়া. ৯। আয়শা বেগম স্বামী গোলাম হোসেন, গ্রাম ঘুশুড়ী. ১০। জহুরা খাতুন পিতা মৃত মোঃ আরশাদ আলী, গ্রাম হোগলা, ১১। সুপদ সরকার, পিতা কালিচরণ সরকার, গ্রাম গোবিন্দকাটি, ১২। শ্রী বিশ্বনাথ ব্যানার্জী, পিতা শ্রী অনন্ত কুমার ব্যানার্জী, গ্রাম পূর্ব তারালী। ১৩। আবুল হোসেন, পিতা বাবর আলী, গ্রাম পাইকাড়া, ১৪। শেখ রিয়াজুল ইসলাম, পিতা শেখ আব্দুল সাত্তার, গ্রাম মৌতলা, ১৫। মোছাঃ লাইলা খাতুন, স্বামী মোঃ বেলায়েত গাজী, গ্রাম চাঁচাই ১৬। মোঃ ফজলুর রহমান, পিতা মৃত মদন সরদার, গ্রাম ঘুশুড়ী, ১৭। একেএম শহিদুল ইসলাম, পিতা মোঃ মোবারক আলী, গ্রাম পাইকাড়া, ১৮। মৃত কাজী আজহারুল ইসলাম, পিতা মৃত কাজী আনোয়ার হোসেন, গ্রাম মৌতলা, ১৯। কাজী আলাউদ্দীন পিতা মৃত কাজী নুরুল হুদা গ্রাম মৌতলা, ২০। সুবেদার এরশাদ আলী খান, পিতা আমানত আলী খান, গ্রাম শ্রীকলা, ২১। মোছাঃ আমনা, বিবি স্বামী মৃত নুর ইসলাম, গ্রাম দুদলী ২২। শেখ সামছুর রহমান, পিতা মৃত শেখ জবেদ আলী গ্রাম রাজাপুর, ২৩। শেখ ইকবাল হোসেন, পিতা শেখ মুঞ্জুরুল হক গ্রাম পাইকাড়া, ২৪। আজিজুর রহমান পিতা আক্তার আলী, গ্রাম তেতুলিয়া, ২৫। আবু সাঈদ সরদার, পিতা মৃত আনোয়ার হোসেন সরদার, গ্রাম পানিয়া, ২৬। মোছাঃ ফজিলা খাতুন,স্বামী গোলাম রহমান ঢালী, গ্রাম মহৎপুর ২৭। খাদিজা খাতুন, পিতা মৃত রজব আলী হাওলাদার, গ্রাম সন্নাসীরচর, ২৮। শেখ নুরুল ইসলাম, পিতা শেখ আব্দুল গনি, গ্রাম ভাড়াশিমলা।
সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই- বাছাই প্রক্রিয়ায় উপজেলা কমিটি ৪০ হাজার জনকে ‘প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। চিহ্নিত এসব ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধা ভাতা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ২৬শে মার্চের আগেই স্থানীয় প্রশাসনের কাছে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা স্থগিত সংক্রান্ত চিঠি যাবে। এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কালিগঞ্জের ২৮ জন “প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন’ হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা স্থগিত সংক্রান্ত চিঠি পাবেন বলে জানা গেছে।
(ফলোআপ-২, চলমান )