পটুয়াখালি সদর উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ সালাউদ্দিন রুবেল: প্রায় সময় শোনা যায় যুবক কলেজ ছাত্রীকে নিয়ে জোর করে বিয়ে করে। তবে এবার এক তরুণী এক কলেজ ছাত্রকে তুলে নিয়ে জোর করে বিয়ে করেছেন বলে সংবাদ প্রকাশ পেল। এই ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীতে। আর সেই বিয়ের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সেই ভিডিওতে দেখা যায় এক যুবককে পিছন থেকে ধরে রয়েছে আরেক ব্যক্তি। যুবক এর পাশে তরুণী বসে রয়েছে। ওই তরুনীর নাম ইসরাত জাহান পাখি। ভিডিওতে দেখা গেছে তরুণী নীল কাগজে স্বাক্ষর করছেন। কিন্তু যুবক বিয়ে করতে মোটেও রাজি না এটাই স্পষ্ট দেখা গেছে। ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই নানারকম প্রশ্ন তুলেছেন। তবে এবার জানা গেল, কি কারনে কলেজছাত্রকে তুলে নিয়ে বিয়ে করলেন ইসরাত জাহান পাখি।
পটুয়াখালীতে নাজমুল আকন (২৩) নামে মির্জাগঞ্জ নিবাসী এক কলেজ ছাত্রকে পটুয়াখালী লঞ্চ ঘাট থেকে উঠিয়ে নিয়ে জোর করে বিয়ে করানোর অভিযোগ উঠেছে এই তরুনীর নামে। তাদের দু’জনার বাড়িই একই মানে মির্জাগঞ্জ উপজেলার পাশাপাশি গ্রামে।
এ ঘটনায় গত ৩রা অক্টোবর নাজমুল নিজে বাদী হয়ে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। যার (মামলা নং- ১০৪৬/ ২০২১ ইং)।
এ ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত নারী ইসরাত জাহান পাখি দাবি করেন, নাজমুলের সঙ্গে তার দু বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আর নিজ ইচ্ছাতেই তাকে বিয়ে করেছেন নাজমুল। এখানে উঠিয়ে নেওয়া কিংবা জোর করে বিয়ে করার যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা। যে কারণে তিনি (ইসরাত) নাজমুলের বাড়ি মির্জাগঞ্জেই বর্তমানে অবস্থান করছেন।
এসব ব্যাপারে নাজমুলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ্ আল-নোমান গণমাধ্যমকে জানান, তার মক্কেল নাজমুল পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের নিয়মিত ছাত্র এবং তিনি সরকারি কলেজের আবাসিক হোস্টেলে থাকেন। মামলার আসামি ইশরাত জাহান পাখি দীর্ঘদিন ধরে নাজমুলকে মোবাইলে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেমের প্রস্তাবসহ বিয়ের প্রলোভন দেখান। কিন্তু তাতে রাজি না হওয়ায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী লঞ্চঘাট এলাকা থেকে নাজমুলকে চোখ বেঁ”ধে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন ২৮ সেপ্টেম্বর অ”জ্ঞা”ত স্থানে নিয়ে সাত-আটজন ব্যক্তি জোর করে তাকে একটি নীল কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন। ধারণা করা হচ্ছে, এ দিয়ে তারা একটি কাবিন নামা তৈরির পায়তারা করছেন। এ ঘটনায় দণ্ডবিধির ১৪৩/৩৬৫/৩৭৯/৩৮৪/৫০৬ ধারা অনুযায়ী আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
তাছাড়া পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনিরুজ্জামান জানান, আদালতের নির্দেশে মামলাটি এজাহার হিসেবে নেওয়া হয়েছে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া তিনি আরো জানান যে, এই ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা রকম আলোচনা-সমালোচনা চলছে। তবে ওই যুবক নাজমুল ইতিমধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তার আইনজীবী বলেছেন তার মক্কেল কে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে ওই তরুণী বিয়ে করেছে। তাছাড়া ওই তরুণী যে জোর করে যুবককে বিয়ে করছে তা ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা গেছে। তবে জোর করে বিয়ে করার ঘটনা অস্বীকার করেছে সেই তরুণী। এই ঘটনাটি বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী খতিয়ে দেখছে।