বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাংকক পৌঁছেছেন পটুয়াখালীর দশমিনায় ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে পুকুরে পড়ে যায় এফডিসিতে সাংবাদিকদের উপর হামলা কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রতিক বরাদ্ধ সম্পন্নঃ প্রচারণা শুরু সাতক্ষীরা জেলা সমিতির ঈদ পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি সভা আশাশুনি কুন্দুড়িয়া গ্রামে বসতবাড়িতে ও গোয়াল ঘরে অগ্নিকাণ্ড। ২০৫০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রয়োজন ৫৩৪ বিলিয়ন ডলার। – পরিবেশমন্ত্রী সাবের চৌধুরী। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর সাথে ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ পাট পণ্যের উন্নয়ন ও বিপণনে একটি সমন্বিত পথনকশা প্রণয়ন করা হবে …বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী নানক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি

আত্মহত্যা নয়, এটি হত্যা!

  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৫.০২ পিএম
  • ৩৯৫ বার পঠিত

যায় যাবে প্রাণ তাহে, প্রাণের চেয়েও মান বড় আমি বোঝাব শাহেনশাহে-ছোটকালে শিক্ষকের মর্যাদা পড়ে বড় হয়েছি। ধীরে ধীরে শিক্ষক কী, কীভাবে শিক্ষকের মর্যাদা দিতে হয় এবং কেন শিক্ষক সবার ওপরে-এটিও আস্তে আস্তে বুঝতে শিখেছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাও আমাদের শিখিয়েছেন। এখনো শিক্ষকের সামনে তিনি বসতে চান না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ছবি বেশ ভাইরাল হয়েছিল, শিক্ষক আনিসুজ্জামান স্যারের জন্য তিনি লাল গালিচা ছেড়ে দিয়েছিলেন। শিক্ষক দেখলেই তিনি নিজে উঠে গিয়ে সালাম-শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, কতিপয় শিক্ষকের কারণে আজ গোটা শিক্ষক সমাজ প্রশ্নবিদ্ধ।
এ শিক্ষক সমাজের কতিপয় বর্বর শিক্ষকের যৌন লালসার বলি হতে হয়েছে খোদ তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের। শুধু তাই নয়, প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার নির্যাতনও করতে ভুল করেন না কতিপয় শিক্ষক নামের বর্বর অমানুষ।
এখানেও তারা থেমে থাকে না। পরীক্ষার খাতায় নম্বর কম দেওয়ার ভয় দেখিয়ে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করে থাকে। আবার পরীক্ষায় কী কী প্রশ্ন আসতে পারে এ ধরনের সাজেশন মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে দিয়ে থাকে। আবার অনেকে আছে, সরাসরি নকল দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের জীবন ধ্বংস করে থাকে।
এখানে আমাদের কতিপয় অভিভাবকেরও দায় আছে। শুধু পাস করতে হবে, ভালো রেজাল্ট করতে হবে, জিপিএ ফাইভ পেতে হবে এ ধরনের চিন্তাভাবনার কারণে প্রকৃত শিক্ষার বিপরীতে মূলত সন্তানের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে থাকে সার্টিফিকেট নামক কিছু কাগজ ধরিয়ে দিয়ে। তাই দিনের আলোতে শত অপরাধ দেখার পরেও প্রতিবাদ না করে বরং নিজে এ অপরাধকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। আবার অন্যদিকে এ ধরনের অপরাধমূলক শিক্ষাও সন্তানের সামনে তুলে ধরছে।
এই শিক্ষক সমাজ আজ এতটাই বিভক্ত যার সংখ্যাও গণনা করা কঠিন। সেই সঙ্গে আছে তথ্য বিভ্রাট। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চেয়ে, শিক্ষার মানের চেয়ে, শিক্ষার্থীর সুন্দর জীবনের চেয়ে রাজনীতি বা দলীয় মনোভাব তাদের অনেকের ভেতর বিদ্যমান। অন্যদিকে অদৃশ্য প্রভুকে খুশি করার রীতি তো আছেই…!
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীর ঘটনাটি আমি ব্যক্তিগতভাবে বলব, আত্মহত্যা নয়, এটি হত্যা। নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয় এটা এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উচ্চপর্যায়ের শিক্ষকদের জানা আছে বলে আমার কাছে প্রতীয়মান নয়।
শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীর কাছে মোবাইল পাওয়া গেছে মানে সে নকল করেছে এটা তদন্ত ছাড়া বলা বা অরিত্রি অধিকারীকে অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত করা; এটাও অপরাধ এবং এ অপরাধ করেছে খোদ ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ।
শুধু তাই নয়, ‘অরিত্রি অধিকারীর বাবা-মাকে স্কুলে ডেকে নিয়ে অধ্যক্ষের কক্ষে বিভিন্নভাবে তাদের অপমান করা হয় এবং অরিত্রিকে টিসি দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিও দেয়।’
একটু লক্ষ করুন, যদি শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারী তদন্তসাপেক্ষে নকল করেছে, এ অপরাধ প্রমাণিত হয় তাহলে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড  কলেজের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা। কিন্তু সেটা তিনি না করে বাবা-মাকে অরিত্রির সামনে অপমান-অপদস্থ করার ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে। রীতিমতো সন্তানের সামনে বাবা-মাকে নোংরা ভাষায় অপমান করার সঙ্গে সঙ্গে ‘টিসি দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেবে’ এ ধরনের ভয়ও দেখানো হয়েছে।
এখন প্রশ্ন আসতেই পারে, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের যেসব শিক্ষক অরিত্রি অধিকারী ও তার বাবা-মাকে অপমান-অপদস্থ করাসহ টিসি দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাকে হত্যা করেছে তারা কী শিক্ষকতার মতো এ মহান পেশার যোগ্য? তারা কী মানসিকভাবে সুস্থ? তাদের কি মানসিক প্রশিক্ষণ নেওয়ার প্রয়োজন আছে?
এটি দেখার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কোনো শিক্ষকের হাতে আমাদের প্রজন্মের শিক্ষার ভার তুলে দিচ্ছি এটি খতিয়ে দেখার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এ শিক্ষকরাও কী শুধু কাগজের শিক্ষক (?) নাকি পড়ালেখা জানা মানবিক শিক্ষক এটি রাষ্ট্রকে ভাবতে হবে।
কারণ, শিক্ষাই যদি জাতির মেরুদণ্ড হয়, তাহলে এ মেরুদণ্ড ধ্বংস করার অধিকার কারও নেই। বরং যেসব শিক্ষক নামের নরপশু আছে, তাদের ব্যাপারে রাষ্ট্রকে কঠোর হতে হবে।
অরিত্রি অধিকারীর ঘটনাটি আমাদের নতুন করে ভাবতে শিক্ষা দিচ্ছে। কারণ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ দেশের প্রতিষ্ঠিত  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
আর এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কতিপয় শিক্ষক যদি শিক্ষকের মর্যাদা রাখতে ব্যর্থ হয়, অমানবিক হয় এবং শিক্ষার্থীকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়ে হত্যা করে; তাহলে সেই দূরের গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের নিয়ে অজানা এক ভয় কাজ করবে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এ জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে গড়ে তুলতে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। জানুয়ারির প্রথম দিনেই দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দিচ্ছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের শিক্ষার প্রতি উৎসাহ জোগাতে উপবৃত্তির ব্যবস্থা করেছে।
অথচ কতিপয় শিক্ষক নামের বর্বর মানুষ নিজের অদক্ষতা আর অজ্ঞতার কারণে মহান এ পেশাকে বিতর্কিত করে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে যাচ্ছে। কতিপয় শিক্ষক দ্বারা কখনো প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে, ছাত্রছাত্রীর হাতে নকল পৌঁছে দিচ্ছে, কোচিং বা প্রাইভেট পড়ার নামে মূল শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করছে। তাই এ ধরনের শিক্ষকদের নিয়ে সরকারকে নতুন করে ভাবতে হবে।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারী তার নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্তৃক অপমান-অপদস্থসহ ভয় পেয়ে যেখানে হত্যার শিকার হয়, সেখানে শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান কোন পর্যায়ের এটিও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
আর সেই সঙ্গে, শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারী হত্যার সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত; তাদের বিরুদ্ধে দ্রত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকার বা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব।

কবীর চৌধুরী তন্ময় : সভাপতি, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
  12345
27282930   
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
    123
25262728   
       
     12
31      
   1234
262728    
       
  12345
2728     
       
   1234
       
     12
31      
1234567
891011121314
15161718192021
2930     
       
    123
11121314151617
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
23242526272829
3031     
      1
       
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
       
2930     
       
    123
18192021222324
25262728293031
       
28293031   
       
      1
16171819202122
30      
   1234
       
14151617181920
282930    
       
     12
31      
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
       
© All rights reserved © MKProtidin.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com